নিজের বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে ইউএনও অফিসে এসে লিখিত আবেদন দিয়েছে নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক ছাত্রী। তার আবেদন পেয়ে প্রশাসন ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।এবং ১৮ বছরের আগে মেয়েকে বিয়ে দিবেন না,এমন লিখিত অঙ্গিকার করিয়েছেন পিতাকে।ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নে। পিরোজপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদের কাছে ওই দিন বিকেলে ওই ছাত্রীর নিজ হাতে লেখা আবেদন নিয়ে আসলে তিনি দ্রুত সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফকে ঘটনাস্থলে পাঠান।নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া ওই ছাত্রী (১৫) সদর উপজেলার কদমতলা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্রী।ওই ছাত্রী জানান, তার পরিবার থেকে তার বিবাহ ঠিক করেছিলো।কিন্তু তার বয়স কম এবং এটি বাল্য বিবাহ বলে সে এই বিয়েতে রাজি হয়নি।পরিবর্তীতে বিষয়টি তার মাদ্রাসার সুপারকে জানালে তিনি ইউএনও সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে তাকে লিখিত আবেদন সহ সেখানে পাঠান।পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিয়েটি বন্ধ করে দেন।তার বাল্য বিবাহ বন্ধ হওয়ায় সে খুশি বলে জানায়।কদমতলা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মুহা: আজাহার উদ্দিন জানান, প্রশাসন থেকে বাল্য বিবাহ বন্ধ করার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে সচেতন করে আসছিলো।এছাড়া পিরোজপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেরও বাল্য বিবাহ রোধে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন। তাই ওই শিক্ষার্থী তার বাল্যবিবাহের কথা মঙ্গলবার তাকে জানালে তিনি তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন নিয়ে পাঠান।এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর পিতা জানান, তার মেয়ের বিয়ের কোন আয়োজন তাদের বাড়িতে ছিলো না।শুধু মাত্র তার মেয়েকে দেখতে আসার কথা ছিলো।তার এলাকায় তার মেয়ের চেয়ে বয়সে ছোট অনেকের বিয়ে হয়েছে বিধায় তিনি তার মেয়েকে বিয়ের দেয়ার জন্য চেষ্টা করেছেন মাত্র।পিরোজপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, শিক্ষার্থীর লিখিত আবেদনের কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে তাদের বাড়ি কদমতলায় গিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সামনে শিক্ষার্থীর পিতা লিখিত অঙ্গিকার করেন তার মেয়ের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার মেয়েকে বিবাহ দিবেন না।পিরোজপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ জানান, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তার কাছে নিজের বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য লিখিত একটি আবেদন নিয়ে তার অফিসে আসেন।তার আবেদনে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুপার মুহা: আজাহার উদ্দিনের সুপারিশ ছিল। এরপর তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফকে শিক্ষার্থীর বাড়িতে পাঠিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়েছে।নিজের বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে ওই শিক্ষার্থীর ভুমিকা প্রশংসার দাবিদার।তাকে দেখে অন্য শিক্ষার্থীরাও অনুপ্রেরনা পাবে।