পিরোজপুর প্রতিনিধি :
পিরোজপুর সদর উপজেলার ডুমরিতলা গ্রামে লালন ফকির (২৫) নামে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় তাকে যুবলীগ কর্মী দাবী করে জেলা শহরে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দ্বাদশ সংসদ নির্বচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএমএ আউয়াল এর সমর্করা।শনিবার রাতে লালর ফকির নামে এক যুবক প্রতিপক্ষের হাতে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।ঢাকায় তার মৃত্যুর খবর পিরোজপুরে পৌঁছালে তাকে (লালন ফকির) যুবলীগ কর্মী দাবী করে রাতেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ-ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।তারা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে লালনের হত্যার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নিহত লালন ফকির পিরোজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক।২০২০ সালের ৪ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের অনুমোদিত পিরোজপুর জেলা কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তার (লালন ফকির) এর নাম রয়েছে। সেখানে তার মোবাইল নাম্বারও উল্লেখ রয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যার পরে পিরোজপুর সদর উপজেলার শারিকতলা-ডুমরিতলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা লালন ফকির ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নৌকা মার্কার সমর্থকদের অভিযোগ রয়েছে। নৌকা মার্কার অফিসে লালনের নেতৃত্বে হামলা করে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করা হয়।এ হামলার ঘটনার পরে ঐ রাতে ২০/২৫ জন লোক লালনের উপর হামলা চালিয়ে তার মাথা, মুখমন্ডল, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতারি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এরপর রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে খুলনা ও পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে তার মৃত্যু ঘটে।এদিকে, লালনের মৃত্যুর খবরে সোমবার রাতে শহরে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়ালের সমর্থকরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।এসময় তারা পিরোজপুর-১ আসনের নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।উল্লেখ্য,পিরোজপুর-১ আসনে বর্তমান এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন।পক্ষান্তরে এ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়পত্র দাখিল করেছেন। নিহত লালন ফকির স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হলেও বর্তমানে সে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম এ আউয়ালের সমর্থক বলে জানা গেছে।এদিকে, বিক্ষোভ মিছিলসহ জেলা শহরে উত্তেজনা দেখা দেয়ায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো. আশিকুজ্জামান। পিরোজপুরের পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লালন হত্যার ঘটনায় জড়িতদের পুলিশ শনাক্ত করেছে। দায়ীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।