মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে রবিবার (১৬জুলাই) থেকে দেশের সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তালাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে শিক্ষকদের ১০টি সংগঠন। শনিবার (১৫ জুলাই) বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একাত্মতা প্রকাশ করা শিক্ষক সংগঠনগুলো হলো-বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস), বেসরকারি ভোকেশনাল শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন (বাশার- জসিম), এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরাম (বাশিফ), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (প্রিন্স), জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট, বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারি ফোরাম (সাইদুল ইসলাম), বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন ও বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম (অপর অংশ)। জাতীয় করনের দাবীতে শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গত ১১ জুলাই থেকে লাগাতার এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। শনিবার চতুর্থ দিনের মতন শিক্ষকরা তাদের এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনকৃত শিক্ষকদের দাবি, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় এই সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বাড়িভাড়া এক হাজার টাকা, ২৫ শতাংশ উৎসবভাতা এবং ৫শ টাকা চিকিৎসাভাতা পাই। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের এক ধাপ নিচে দেওয়া হয়। সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল না দেওয়ার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। কয়েক বছর ধরে কোনো ধরনের সুবিধা না দিয়েই অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির(বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, আমাদের এক দফা দাবি, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবো। আমরা পুলিশের সাথে কথা বলেছি। তাদের অবগত করেছি কর্মসূচির বিষয়ে। আমাদের এ আন্দোলনের সরকারের বিরুদ্ধে নয়। আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি জাতীয়করণের দাবিতে। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে চাই। দাবি আদায় হলে এক সেকেন্ডও দেরি করবো না আমরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।