বিশ্বের‘সবচেয়ে দামি’ চারাপিতা নামের মরিচগাছ কুমিল্লার আহমেদ জামিল নামে এক কৃষক বাড়িতে । তিনি শখের বসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চারাপিতা জাতের ৫০ টি মরিচের বীজ এনে নিজের বাড়িতে লাগান। ওই বীজ থেকে ফোটানো তিনটি গাছে কয়েকশ মরিচ ধরেছে। দেখতে গোলাকার এ মরিচ কাঁচাঅবস্থায় সবুজ রঙের হলেও পাকলে হলুদ হয়ে যায়। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে আবাদ হওয়া এ জাতের মরিচে ঝাল কম। এটি সুগন্ধিজাতীয় মরিচ। বাংলাদেশের আবহাওয়া এ মরিচ চাষে উপযুক্ত কিনা, সেটি গবেষণার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা। কৃষক আহমেদ জামিল জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সম্ভবত আমিই প্রথম এ মরিচের বীজ লাগাই। আমেরিকা থেকে বীজ সংগ্রহ করি। চার মাস আগে বস্তার ভেতরে মাটি ভরে বীজ রোপণ করি। ৫০টি বীজের মধ্যে ৩টি বীজ থেকে চারা গজায়।একেকটি গাছ বুকসমান। তিন বছর পর্যন্ত এ গাছ থেকে মরিচ পাওয়া যাবে। কৃষক জামিলের দাবি, চারাপিতা মরিচ পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মরিচ। এক কেজি মরিচের দাম ২৬ হাজার ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় ২৮ লাখ টাকা । অত্যন্ত সুগন্ধি এই মরিচ ধনীরা ব্যবহার করেন। আরব দেশের রাজা-বাদশাহরা তাদের খাবারে এই মরিচ ব্যবহার করতেন। মক্কার অনেক দামি হোটেলেও এটি ব্যবহার হয়। তিনি বলেন, এ মরিচগাছে বৃষ্টির পানি পড়তে পারে না। কিন্তু রোদ লাগাতে হয়। সচরাচর এ বীজ দেশে পাওয়া যায় না। বাণিজ্যিক চাষও তেমন হয় না। তবে পেরুতে চাষ হয়। এটি মসলাজাতীয় মরিচ। এটির তেমন ঝাল নেই। বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর (পার্টনার) মিজানুর রহমান বলেন, আহমেদ জামিল সাহেবের চারাপিটা মরিচ সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের দেশের মাটির সঙ্গে এটা উপযোগী কিনা গবেষণা করে দেখতে হবে। তবে মরিচের যে দাম বলা হচ্ছে সেই দাম সম্ভবত এখন আর নেই। এখন দাম অনেক কমে গেছে। আর এই মরিচটি শুকিয়ে বিক্রি করতে হয়। প্রায় দুই হাজার কাঁচা মরিচে এক কেজি শুকনা মরিচ হয়। তিনি আরো বলেন, পেরুর চারাপিতা কাঁচা মরিচের সঙ্গে সব কিছুই মিল আছে। তবে এখনই এটি সম্পর্কে খুব বেশি বলা যাবে না। সবে মাত্র আসলো। এখন গবেষণা চলবে। পরবর্তীতে এটি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে। এর আগে জামিল কুমিল্লার লালমাই উপজেলার নাওরা গ্রামে সাত একর জমিতে ব্ল্যাক (কালো) টমেটো চাষ করেন। এর পর তিনি সাউপেরিলা তেলের চাষ করেন। ৭০ একর জমিতে সাউপেরিলা তেলের গাছ লাগান। এবার তিনি চারাপিতা মরিচগাছ বপন করেন।