পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্বজল মোল্লার অফিসিয়াল মুঠোফোন নম্বর (সরকারি নম্বর) ক্লোন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই নম্বর থেকে ব্যবসায়ীদেকে চাল দেয়ার লোভ দেখিয়ে বিকাশে দুই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ করেছেন।জানা গেছে, একটি অসাধু চক্র কাউখালী ইউএনও স্বজল মোল্লার অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে বুধবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১১.৪৩ মিনিটের দিকে উত্তর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রতন খান ও দক্ষিণ বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল কবির স্বপনকে কল দেয় প্রতারক চক্র। তাদের বলা হয় সরকারি বরাদ্দকৃত ৩৫ টন চাল বিক্রি করা হবে। বরাদ্দকৃত চাল আপনাদের কাছে বিক্রি করা হবে।এখন জরুরি কাজের জন্য কিছু টাকা প্রয়োজন।তাই এখনই ২ লাখ টাকা পাঠান।বাকি টাকা বরাদ্দের কাগজ নেয়ার সময় দিয়েন। সে কথা বিশ্বাস করে দুই ব্যবসায়ী আড়াই লাখ টাকা ‘ইউএনওর’(প্রতারকের) ব্যক্তিগত নম্বরে বিকাশ করেন।এরপর ওই দিন রাতে ইউএনওর সাথে কথা বলার পর প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পায়।বিষয়টি নিয়ে বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১১ টার দিকে ইউএনও কাউখালী পিরোজপুর ফেসবুক আইডি থেকে “সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে ইউএনও কাউখালীর ০১৩২১১৩৪০২৯ নম্বরটি ক্লোন করে বিভিন্ন জনের থেকে অবৈধ সুবিধা চাচ্ছে।এবিষয়ে যেকোন ধরণের লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো” এমনি একটি সর্তকতামূলক পোষ্ট দেন।উপজেলার উত্তর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রতন খান বলেন, বুধবার বেলা ১১.৪৩ মিনিটের দিকে ‘হঠাৎ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নম্বর থেকে আমার মোবাইলে ফোন আসে। সেখানে চাল বিক্রয়ের জন্য এক জন চাল ব্যবসায়ীর সাথে তাকে কথা বলানোর জন্য বলেন। তখন তিনি বাবুল ডিলার নামের এক ব্যবসায়ীকে তার ফোন দিয়ই কথা বলিয়ে দেন।এসময় ওই প্রতারক চক্র বাবুল ডিলারকে চালের বরাদ্দের জন্য দুই লাখ টাকা পাঠাতে বলেন। এসময় প্রতারক চক্র একটি বিকাশ নাম্বার দিয়ে তাতে দুই লাখ টাকা পাঠাতে বলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি দুই বারে দুই লাখ টাকা তাদের দেয়া বিকাশে নম্বরে পাঠান।দক্ষিণ বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল করিম স্বপন বলেন, দুপুরের দিকে তার মোবাইলে ইউএনওর ফোন থেকে ফোন আসে।এসময় তিনি ফোনে চাল বিক্রয়ের জন্য এক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বদলানো জন্য বললে তিনি চাল ব্যবসায়ী পলাশেরএর সাথে তাকে কথা বলিয়ে দেন।চক্রটির কথা মতন ওই ব্যবসায়ী প্রথমে ৫০ হাজার টাকা পাঠান।এর কিছুক্ষণ পর আমার কাছে আবারও একই নম্বর থেকে আরো ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। পরে বিষয়টি আমার সন্দেহ হয়। কিছুক্ষণ পর ওই নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কল ঢোকেনি।পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ইউএনওর ফোন নম্বরটি ক্লোন হয়েছে।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউএনও স্বজল মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, তার মোবাইল ফোন নম্বরটি ক্লোন করে ব্যবসায়ীদের কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে।ইতোমধ্যে দুই চাল ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে গেছে প্রতারক চক্র।তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।বিষয়টি থানা পুলিশ দেখবেন।