ক্রমশ বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’।আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসের তথ্যানুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টির বর্তমান অবস্থান থেকে আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল বুধবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ভোলার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল দিয়ে অতিক্রম করতে পারে।ঘূর্ণিঝড় হামুনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিকেল ৩টায় বরিশাল বিভাগীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সভা করে।সেখানে বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী বলেন, বিভাগের সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।সেইসাথে মেডিকেল টিম গঠন ও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যথেষ্ট অর্থ, চালসহ শুকনা খাবার, ত্রাণ সামগ্রীও প্রস্তুত।এদিকে উপকূলীয় এলাকার সাগর ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে সর্তকর্তামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) সেচ্ছাসেবকরা।সিপিপি বরিশালের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া জানিয়েছেন, দিনের বেলা হওয়ায় বর্তমানে বরিশাল বিভাগের ১ হাজার ৮৪৫টি সাইক্লোন সেল্টারে কেউ আশ্রয় নিয়েছে, এমন খবর নেই।আবহাওয়ার অবনতি ঘটলে সন্ধ্যার মধ্যেই আশ্রয়কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিয়ে আসার জোরালো কার্যক্রম চালানো হবে।তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের উদ্ধার কাজে বরিশাল বিভাগের ৫ জেলায় ৩২ হাজার ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।বিভাগে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) দেড় হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।বরিশাল বিভাগের মঙ্গলবার ভোরে কয়েকটি উপজেলায় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হয়েছে।আকাশে মেঘ ও মৃদু বাতাস বইছে। নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।বৈরি আবহাওয়ার কারণে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে আকস্মিক লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে।নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ বরিশালের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেন বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অভ্যন্তরীণ ও ঢাকা-বরিশাল রুটের সকল লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিটি স্থানে মাইকিংয়ের মাধ্যমে মাছ ধরার নৌকা, যাত্রীবাহী ট্রলারসহ সকলকে নিরাপদে যেতে বলা হয়েছে। লঞ্চগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নোঙর করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগ পর্যন্ত সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে।ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলে লঞ্চগুলো চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।