ঝালকাঠি-ভান্ডারিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুৃরে পড়ে ১৭ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছে।শনিবার(২২ জুলাই)সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে গাবখান ধানসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এ দুর্ঘটনা ঘটে।ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৬৫৪৯ বাশার স্মৃতি পরিবহন নামের বাসটি প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে ঝালকাঠি যাচ্ছিল। পথিমধ্যে গাবখান ধানসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ছত্রকান্দা স্হানে দ্রুতগতিতে আসা বাসটি হঠাৎ উল্টে পুকুরে পড়ে যায়।খবর পেয়ে ঝালকাঠি থানা পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার কাজ শুরু করে।ঝালকাঠি থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)নাসির উদ্দিন সরকার জানান,এখন পর্যন্ত আটজন নারী,ছয়জন পুরুষ ও তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।আহত অবস্থায় ২৫ জনকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১৪ জনের পরিচয় জানা গেছে তাঁরা হলেন, ভান্ডারিয়া পৌরসভা এলাকার পান্না মিয়ার পুত্র তারেক রহমান(৪৫),মুজাফফর আলী পুত্র সালাম মোল্লা(৬০), মৃত সালাম মোল্লার পুত্র শাহীন মোল্লা(২৫),ভান্ডারিয়ার পশারিবুনিয়ার জালাল হাওলাদারের কন্যা সুমাইয়া(৬), ভান্ডারিয়ার রিজাভ পুকুর পাড় এলাকার মৃত লাল মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম(৬০)ও তার পুত্র আবুল কালাম হাওলাদার,মেহেদীগঞ্জ সদরের রিপনের কন্যা রিপামনি (২),রাজাপুরের নিজামিয়া গ্রামের মাওলানা নজরুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা বেগম(৪৩)ও তার কন্যা খুশবো আক্তার (১৭),বাখেরগঞ্জের চরবোয়ালিযা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের পুত্র আবদুল্লাহ(৮),রিপন হাওলাদার মেহেদীগঞ্জের রিপন হাওলাদারের স্ত্রী আইরিন আক্তার (২২),রাজাপুরের বলাইবাড়ির নজরুল ইসলামের পুত্র নয়ন (১৬),ভান্ডারিয়ার উত্তর শিয়ালকাঠির মৃত ফজলুল হক মৃধার স্ত্রী রাবেয়া বেগম(৮০),কাঠালিয়া উপজেলার তৈয়বুর রহমানের কন্যা সালমা আক্তার মিতা(৪২)। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে তাঁরা হলেন,কাঠালিয়ার আবুল বাশার,রিজিয়া,আরজু ভান্ডারিয়ার রাসেল মোল্লা, ফাতিমা,রাসেল,মনিরুজ্জামান,নলছিটির রিজিয়া, আজিজুল রাজাপুরের মনোয়ারা,ভোলার সুইটি,বাউফলের রুকাইয়া,সিদ্দিকিুর,আলাউদ্দিন,সোহেল,আবুল কালাম, বরগুনার আকাশ,সাতক্ষিরার সোহাগ, মঠবাড়িয়ার নাঈমুল, বাউফলের সিদ্দিকিুর ঝালকাঠি আল-আমিন, বরিশালের সাব্বির।এ ছাড়া দুইজনকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে যাদের নাম জানা যায়নি। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে আহত যাত্রী রাসেল মোল্লা জানান,বাসটি সকাল ৮.৪৫ মিনিটে ভান্ডারিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছাড়ে।পথি মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী ওঠানোর ফলে যাত্রী সংখ্যা হয় প্রায় ৬০/৬৫ জন।বাসটির ছাদেও কয়েকজন যাত্রী ছিল। বাসটি দ্রুত গতিতে ঝালকাঠির ছত্রকান্দা ধানসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ অতিক্রমকালে চালক মোহন সুপারভাইজারের সাথে কথা বলছিল।এ সময় হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের বামদিকের পুকুরে পড়ে যায়।স্থানীয় ইউপি সদস্য ফয়সাল রহমান বাবু বলেন, দুর্ঘটনার সময় আমি পরিষদের সামনেই ছিলাম।পুলিশ এবং দমকলবাহিনী পৌছার আগেই আমরা ৫০/৬০ জন মিলে উদ্ধার অভিযান শুরু করি।ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন,পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের স্যারের পক্ষ থেকে লাশ দাফন ও পরিবহনের জন্য এক লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান ১৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হবে। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধ্যানের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলীকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে।