পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আসামী ছিনিয়ে রাখা সহ পুলিশকে লাঞ্চিত করার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।আর এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছেন।তাদের কাছ থেকে পুলিশ দুটি পিস্তল, মেগজিন ও গুলি উদ্ধার করেছেন। মঙ্গলবার রাতে থানা পুলিশ বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেন।আসামী ছিনিয়ে রাখা ও এ সময় পুলিশকে লাঞ্চিত করার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে থানা পুলিশের অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার (০৭ নভেম্বর) রাতে পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।গ্রেফতারকৃত আসামী রেদোয়ান গোলদারের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ১টি মেগজিন, ৮ রাউন্ড গুলি, ১টি ছোরা এবং সোহেল মাঝি ওরফে ফল সোহেলের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন ও ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) অফিসে এ বিষয়ে বুধবার (০৮ নভেম্বর) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিং দেয়া হয়।প্রেস ব্রিফিং এ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শফিউর রহমান বলেন, জেলার মিঠবাড়িয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে কিশোর গ্যাং এর দৌরত্মে ও অত্যাচারে এলাকবাসী অতিষ্ঠ।গত সোমবার (০৬নভেম্বর) তার পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে সোহেল মাঝি নামের এক কিশোর গ্যাং লিডারকে ছিনিয়ে নেয়।এ ঘটনায় পুলিশ মামলা করেন।পরে গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাং লিডার ও হামলার মাস্টার মাইন্ড সোহেলকে সহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছেন। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে সোহেল মাঝির দায়িত্বে থাকা ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন, ০৪ রাউন্ড গুলি এবং রেদোয়ানের দায়িত্বে থাকা ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন, ৮ রাউন্ড গুলি ও ২টি দারালো দাও উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার ধানিসাফা ইউনিয়নের চিত্রা গ্রামের মো. সোহেল মাঝি ওরফে ফল সোহেল(২৭), তুষখালী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট মাছুয়া গ্রামের আজিজ গোলদারের চেলে রেদোয়ান গোলদার (৩৯), একই গ্রামের তোতাম্বার আকনের ছেলে বেলায়েত হোসেন আকন (৫৫), মঠবাড়িয়া পৌর সভার ৭ নম্ব ওয়ার্ডের আব্দুর রহিমের পুত্র স্বাধীন (১৬), এনামুল হক রনি, হাসান সর্দার, আক্তার নিজাম, মো. রিয়াজ হাওলাদার, মো. বেলাল খান, লাবু বেপারী, মিলন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সাথে জড়িত ও আটকরা ওই উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সদস্য মো. রিয়াজ উদ্দিনের কর্মী।থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (০৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তারা পৌর সভার সামনে থেকে একটি মামলার আসামী সোহেল মাঝিকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকতৃ ওই সোহেল মাঝি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ উদ্দিনের কর্মী। তাই তাকে ৩০-৪০ জনের একটি দল ছিনিয়ে রাখেন।এ সময় পুলিশকে লাঞ্চিত করা হয়।স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রিক্সা চালক জানান, গ্রেফতারকৃত সোহেল উপজেলা চেয়ারম্যানের লোক।তাই উপজেলা চেয়ারম্যান নিজে নেতৃত্ব দিয়ে ওই আসামী ছিনিয়ে রাখেন।এ সময় পুলিশ তাতে বাধা দিলে তাদের মারধর করা হয়।এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ জানান, ওই গত সোমবার (০৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পৌর সভার সামনে আ’লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ কিছু কর্মীরা অবরোধ বিরোধী স্লোগান সহ কর্মকান্ড করছিলেন।এ সময় পুলিশ গিয়ে সেখানে থাকা সোহেল মাঝিকে গ্রেফতার করেন। খবর পেয়ে আমি সেখানে যাই।পরে পুলিশ নিজ উদ্যোগেই সেহেল মাঝিকে ছেড়ে দিয়েছে।কোন আসামী ছিনতাই বা পুলিশ লাঞ্চিত বা মারধরের ঘটানা ঘটেনি।