পিরোজপুরের কাউখালীতে সালিশ বৈঠকে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার কথা বলায় স্ত্রীর ওপর অভিমার করে মোঃ শাওন হাওলাদার (২২) নামের এক যুবক সালিশ বৈঠকে বসে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।শনিবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে মহিলা পরিষদের কাউখালী উপজেলার শাখার কার্যালয়ে সালিশ বৈঠক চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।পরে তাকে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। মোঃ শাওন হাওলাদার উপজেলার চিরাপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের ডুমজুরি গ্রামের মোঃ শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে ও তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার একই গ্রামের মোঃ আলমাচ হোসেনের মেয়ে।জানা গেছে, কিছুদিন পূর্বে সাংসারিক অশান্তির কারণে ফাতিমা আক্তার শাওনের সঙ্গে সংসার করবো না বলে বাপের বাড়ি চলে যায়।এর কয়ে দিন পর স্ত্রীকে আনতে গেলে ফাতিমা শাওনকে তার স্বর্নালঙ্কার ও কিছু টাকা তার বাবার বাড়িতে দিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।শাওন তার কথা মতন তা দিয়ে তাকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য বললে কয়েক দিন পরে যাবে বলে।এর কয়েক দিন পরে ফাতিমা শাওনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে তার সঙ্গে সংসার করবেন না বলে মহিলা পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।এবিষয়ে মহিলা পরিষদ থেকে গত বৃহস্পতিবার শাওনকে পরিষদে উপস্থিত হওয়ায় জন্য নোটিশ প্রদান করেন।ওই দিন উভয় পক্ষে সালিশ বৈঠকে উপস্থিত হলে উভয় পক্ষের কথা শুনে শনিবার পরবর্তী সালিশ বৈঠকের দিন ধার্য করেন সালিশদারগন।শনিবার ওই সালিশ বৈঠকে ফাতিমা শাওনের সঙ্গে আর সংসার করবেন বলে সালিশ বৈঠকে যানান।পরে সালিশ দারগন উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য বৈঠকে কাজীকে ডেকে আনা হয়।এসময় তালাক নামায় শাওনকে স্বাক্ষরের জন্য বললে সে স্বাক্ষর না করে তার সাথে থাকা বিষপান করে।পরে স্হানীয় ও তার পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়।আত্মহত্যা চেষ্টা করা শাওন বলেন, আমার স্ত্রী গত তিন মাস আগে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। এর কয়েক দিন পরে আমি তাকে আনতে গেলে সে আরো কয়েক দিন বেড়িয়ে তার পরে যাবে।এর কিছু দিন পর সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলে মহিলা পরিষদের দরখাস্ত দেয়।এনিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় সালিশ বৈঠকে আমার স্ত্রী তার বাব মায়ে চাপে তাদের কথা মতন আমাকে তালাক দিতে রাজি হয়।আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করতে চাই আমি তাকে তালাক দিতে চাই না।সে যখন আমার সাথে সংসার করবেনা তখন আমার জীবন শেষ করে দেয়ার জন্য কীটনাশক ঔষধ খাইছি।সালিশ বৈঠকে উপস্থিত থাকা সালিশ দারগন বলেন, মেয়েটি শাওনের সঙ্গে সংসার করবে বলে সিদ্ধান্ত নিলে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে তাদের তালাকের সিদ্ধান্ত হয়।তখন তালাকের জন্য কাজী ডেকে আনলে কাজী তালাকের জন্য শাওনকে তালাক নামায় স্বাক্ষর দিতে বললে শাওন তার সাথে থাকা কীটনাশক পান করে।কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম রাজু বলেন, শাওন হাওলাদারকে কীটনাশক পানকরা অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জাকারিয়া বলেন, সালিশ বৈঠকে বসে শাওন হাওলাদার নামের এক যুবক বিষপান আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে সংবাদ পেয়েছি।অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।