ঝালকাঠিতে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে প্যাডেলের রিক্সা চালিয়ে জীবন ধারন করে আসছেন বৃদ্ধ ফুল মিয়া। বয়সের কারণে বেশিক্ষণ রিক্সা চালাতে পারেন না তিনি। তাই আয়ও কমে গেছে তাঁর।দিনে ১০০ টাকার উপর উপার্জন করতেও হিমশিম খেতে হয় তাকে। তার গ্রামের বাড়ী থেকে শহরে আসতে প্রতিদিন তাকে যাতায়াত খরচ বাবদ ৫০ টাকা গুনতে হয়। এক মেয়ে ও তিন ছেলের মধ্যে তার বড় ছেলে দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে ও মেরুদন্ডে আঘাত পেয়ে অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা না করাতে পেরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তার বসত ঘরটির এমন অবস্থা যে কোন মুহুর্তে ভেঙে পড়তে পারে তা তাদের গায়ের উপর। ফুল মিয়ার দুরবস্থা দেখে ঝালকাঠী জেলা পুলিশের ডিএসবি শাখার পুলিশ পরিদর্শক গামীমুর রহমান বিষয়টি তাঁর বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেন। তিনি ও তার বন্ধুদের সহযোগিতায় ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ফুল মিয়াকে বুধবার (২ আগষ্ট) সকালে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে একটি নতুন ব্যাটারী চালিত রিক্সা ও বাজার কিনে ফুল মিয়াকে উপহার দেন। একই সাথে বৃদ্ধের পরিবারকে এক সপ্তাহের বাজার ও স্ত্রীর জন্য শাড়ি কিনে দেন তিনি। গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তার মানবিক কাজে খুশি পুলিশ বিভাগের সবাই। ব্যাটারী চালিত নতুন রিক্সা পেয়ে খুশি ফুল মিয়া। এ বিষয় ঝালকাঠি ডিএসবি পুলিশের পরিদর্শক গাজী শামিমুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ঝালকাঠি সদর উপজেলাধীন পোনাবালিয়া গ্রামে বসবাস করেন ফুল মিয়া। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ৫০ বছর ধরে ঝালকাঠি শহরে রিকশা চালান তিনি। এতে যা আয় হয় তা দিয়েই কোন রকমের চলে তাদের সংসার। প্যাডেলের রিকশা চালাতে কষ্ট হয় তাঁর। এখন আর আগের মতো আয়ও হয় না। তাঁর রিকশায় উঠে একদিন বৃদ্ধ এ রিকশা চালকের গল্প শুনে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের সহযোগীতায় একটি ব্যাটারী চালিত রিক্সা কিনে দেই। ব্যাটারী চালিত রিক্সাটি পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ফুল মিয়া পুলিশ পরিদর্শক গাজী শামীম সহ সকলের জন্য দোয়া করেন। এর তার স্ত্রীকে রিক্সায় চড়িয়ে খুশি মনে চলে যান।