মুন্সীগঞ্জে গজারিয়া উপজেলা মিয়াজী টি.এইচ. মেমোরিয়াল হাসপাতাল নামে বেসরকারি একটি হাসপাতালের চিকিৎসকের অবহেলায় সিজারিয়ান অপারেশনের প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও রোগীর স্বজনরা হাসপাতালটিতে অবস্থান নিয়ে কর্মরত স্টাফদের অবরুদ্ধ করে রাখে।মারা যাওয়া ঐ প্রসূতির নাম নিপা আক্তার (২৬)।ভবেরচর ইউনিয়নের চরপাথালিয়া গ্রামের খাজ আলমের কন্যা সে ভবেরচর এলাকার ভাড়াটিয়া মো.শামীমের স্ত্রী বলে জানা গেছে।নিহত প্রসূতির বড় রত্না আক্তার জানান, এটা তার দ্বিতীয় সন্তান, শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে ডা. রাজিয়া বেগমের তত্ত্বাবধানে প্রসূতি নিপা আক্তার কে হাসপাতালে ভর্তি করান।সকল পরিক্ষা নিরীক্ষা শেষে সারে পাঁচ টায় সিজারিয়ান অপারেশন শুরু হয়।অপারেশন শুরুর ১০-১৫ মিনিট পরে তাদের জানানো হয় মেয়ে বাচ্চা হয়েছে, বাচ্চার অবস্থা ভালো।কিন্তু দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পরও নিপাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় তাদের সন্দেহ হয়।তারা ডিউটিরত নার্স দের একাধিক বার জিগ্যেসবাদ করলে।কর্তব্যরত সেবিকা ও স্টাফ তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে।পরবর্তীতে সারে সাতটায় পরে তাদের জানানো হয় বাচ্চার মায়ের অবস্থা খারাপ তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে হবে।তারা তড়িঘড়ি করে তাকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-একটিভ মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।সেখান থেকে তাদের জানানো হয় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে অনেক আগেই নিপার মৃত্যু হয়েছে।বিষয়টা সম্পর্কে তার বক্তব্য জানতে ডাঃ রাজিয়া বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রোগীর আগ থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ছিল আমি অপারেশন করার পরে বিষয়টি ধরতে পেরেছি।আমি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দিতে বলেছিলাম।এখানে আমার কোন অবহেলা ছিল না।সরজমিনে হাসপাতালে গিয়ে ডিউটি ডাঃ, ম্যানেজার ও অন্য কোন স্টাফ দের পাওয়া যায় নি। শুধু একজন নার্স অভ্যর্থনা টেবিলে বসে থাকতে দেখা যায়।তার কাছে বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সে নাইট ডিউটির কথা বলে।তার আসার পুর্বে রুগীকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে বলে জানায়।এসময় মৃত্যু নিপা আক্তারের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে চিকিৎসকের রোম ভাংচুর করার চেষ্টা করলে গজারিয়া থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ওসি তদন্ত আক্তারুজ্জামান যানান। নিহতের স্বজনরা থানায় এসেছেন।এ বিষয়ে গজারিয়া আইন আনুক ব্যাবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।উল্লেখ্য হাসপাতাল পরিচালনায় অব্যবস্থাপনা, ডাক্তারের বদলে নার্স দিয়ে অপারেশন করা, রোগীদের সাথে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে।এর আগেও ২০২০সালের ১৯ জুলাই এই হাসপাতালে ডাক্তারের বদলে নার্স দিয়ে অপারেশন করার কারণে পুরান বাউশিয়া গ্রামের ইউসুফ আলীর সন্তান সম্ভবা স্ত্রী খাদিজা আক্তার (৩০)এর মৃত্যু হয়।এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাসপাতালটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।