মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) সংবাদদাতা:
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানীসাফা বাজারে মনির হোসেন সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে অপ-চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নবজাতকের বাবা ব্যবসায়ী কামেল হাওলাদার শিশু হত্যার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও ক্লিনিক বন্ধের দাবীতে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন। এর আগে শনিবার দুপুরে ওই ক্লিনিক বন্ধ ও নবজাতক হত্যার বিচারের দাবিতে ওই ক্লিনিকের সামনে এলাকাবাসি বিক্ষোভ করেন। কামেল হাওলাদার উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের বাদুরা গ্রামের কামাল হাওলাদারের ছেলে।মৃত্যু নবজাতকের বাবা কামেল হাওলাদার জানান, আমার স্ত্রী আয়শা আক্তার গত ১০ ডিসেম্বর প্রসব বেদনা শুরু হলে স্থানীয় গ্রাম্য মহিলা চিকিৎসক সেলিনা বেগম ১১ ডিসেম্বর সাফা বাজার মনির ক্লিনিকে নিয়ে যায়। ক্লিনিক মালিক মনির আমাকে আশ^াস দেয় অন্য কোথাও নেয়ার দরকার নেই। এখানে অভিজ্ঞ সার্জন ও নার্স আছে তারা নরমাল ডেলিভারী করতে পারবে, প্রয়োজনে ভালো ভাবে সিজার করবেন। নরমাল ডেলিভারী কথা বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অনেকক্ষন চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে আমাকে না জানিয়েই সিজার করেন এবং মৃত্যু সন্তান হয়েছে বলে আমাকে জানায়। এমনকি আমাকে আল্টাসনোগ্রাফির রিপোর্ট গড়িমাসি করে দুদিন পরে দেয়।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা সেবা চলছে। ময়লার পানি ট্রাপ দিয়ে ফ্লোরে পরছে। সেখানে পলিথিন ঝুলিয়ে রাখছে। অপারেশন থিয়েটারে মরিচাপড়া যন্ত্রপাতি, দেয়ালে রক্ত, থুথু ও পানের পিক। পাশের রুমে ১৮ জোড়া হাতের ওয়ানটাইম গেøাবস ধুয়ে শুকাতে রেখেছেন।এ বিয়য়ে ক্লিনিকের স্বত্ত¡াধিকারী মনির হোসেন বলেন, অপারেশন থিয়েটারে শিঘ্রই রং করা হবে। গেøাবসগুলো সরিয়ে ফেলা হবে।সার্বক্ষণিক একজন এমবিবিএস ডাক্তার ও ডিপ্লোমাধারী নার্স আছেন কি? তিনি ডাক্তার ও নার্স না থাকার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন এবং সংবাদ না করার জন্য অনুরোধ জানান।উল্লেখ্য- ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর মনির ক্লিনিক অভিযান চালিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৎকালীন সহকারি কমিশণার (ভূমি) সৈকত রায়হান অপারেশনের সার্জিক্যাল ডাক্তার, আলট্রাসনোগ্রাম, রক্ত ও প্রেসার মাপাসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকার দোষ স্বীকার করায় ওই ক্লিনিকের মালিককে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেন।স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাকায়েত হোসেন, রুবের বেপারী, কামরুল হোসেন জানান, এ ক্লিনিকে একাধিক অঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সুবিধাবাদীদের ম্যানেজ করে তার অবৈধ কর্যক্রম পরিচারনা করে আসছেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। বিজয় দিবসের পর সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।