নড়াইলে স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আকরাম হোসেন বৃহস্পতিবার(১৩ জুলাই) দুপুরে এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন। যাবজ্জীবন কারাদন্ড ছাড়াও আসামিকে ২০হাজার টাকা জরিমান অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রমের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। আসামি জামিনে যেয়ে পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই আদালত এই দন্ড দেন। মামলার বিবরণে জানাগেছে, আমেনা খাতুন (৩০) নামে দন্ডপ্রাপ্ত এই আসামি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার আমতলা গ্রামের মৃত ছিদ্দিক ফকিরের মেয়ে। মামলার বাদী কালিয়া উপজেলার ফুলদাহ গ্রামের মোঃ সবুর শেখের ছেলে । ১৩/১৪ বছর আগে মোঃ ইবাদুল শেখের সাথে আমেনা খাতুনের বিবাহ হয়। বিবাহের পর তাদের সংসারে দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। সে পেশায় ভ্যান চালক হওয়ায় সংসারে অভাব অনটন নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকতো। এ কারনে ফুলদাহ ও আমতলা গ্রাম পাশাপাশি হওয়ায়র স্ত্রী আমেনা খাতুন প্রায় তার পিতার বাড়ীতে চলে যেত। সাংসারিক অশান্তির কারনে ২০২০ সালের মে মাসের ৯ তারিখে আমেনা খাতুন তার পিতার বাড়ীতে চলে যায়। রাতে ইবাদুল তার স্ত্রীকে ফেরত আনতে তার শ^শুর বাড়ী আমতলা গ্রামে যায়। পরের দিন সকালে মামলার বাদী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে পারে তার ছেলে ইবাদুল আতœহত্যা করেছে। বাদী সহ সাক্ষীরা আমতলা গ্রামে যেয়ে দেখতে পায় ইবাদুল বাড়ীর পাশে বাশের সাথে গামছা পেচানো অবস্থায় আছে। পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ একটি অপমৃত্যূর মামলা করে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরন করে। পরে মামলাটি পিবিআই তদন্ত কালে প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে আমেনা খাতুন পুলিশের নিকট স্বামীকে কে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে সেখানেও আমেনা খাতুন নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। এ অবস্থায় পিবিআই তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আমেনা খাতুনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এদিকে বিচারিক প্রক্রিয়াচলা কালে আসামী আমেনা খাতুন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে কিছুদিন পরে পালিয়ে যায়। ফলে তার অনুপস্থিতিতেই দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া চলাকালে মোট ১৭জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষে আসামি আমেনা খাতুনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবে প্রমান হলে বৃহস্পতিবার রায়ের ধার্য দিনে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ছাড়াও অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়।