
পিরোজপুর প্রতিনিধি:
পিরোজপুরের নেছারাবাদে প্রায় চার বছর আগে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)–এর চারিত্রিক বিষয়ে অমর্যাদাকর মন্তব্য এবং ছাত্রীদের হিজাব–বোরকা পরা নিয়ে আপত্তিকর আচরণের প্রতিবাদে কামারকাঠী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কাকলী রাণী মিস্ত্রীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী–অভিভাবক ও স্থানীয়রা। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে সাময়িক বরখাস্তকৃত শিক্ষক কাকলী মিস্ত্রি আজ আদালত কর্তৃক চাকরিবহালের নির্দেশনা পেয়ে স্কুলে আসলে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে বিদ্যালয়সংলগ্ন সড়কে অভিভাবক–শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের ব্যানারে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে প্রদর্শিত ব্যানারে উল্লেখ করা হয়, শ্রেণিকক্ষে মহানবী (সা.)–এর চরিত্র সম্পর্কে অমর্যাদাকর মন্তব্য ও অনুপযুক্ত আচরণে শিক্ষার্থী–অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা অভিযুক্ত শিক্ষীকার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নূরে জান্নাত বলেন,“কাকলী ম্যাডাম আমাদের নবী ও পর্দা নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছিলেন। তাকে স্কুলে আসতে দেওয়া হলে আমরা ক্লাস করব না।অভিভাবক পারভীন বেগম বলেন, “ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করা একজন শিক্ষক স্কুলে গ্রহণযোগ্য নয়। তাকে স্কুলে ফিরতে দিলে আমি আমার মেয়েকে আর এখানে পড়াব না।স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহারাব হোসেন জানান, প্রায় চার বছর আগে বিদ্যালয়ের পাঠদানের সময় নবী ও বোরখা নিয়ে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে শিক্ষিকা কাকলী রানী মিস্ত্রীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হলে তার পক্ষে রায় আসে। রায়ের কপি নিয়ে তিনি আজ বিদ্যালয়ে ফেরার চেষ্টা করলে তাকে স্থানীয়ভাবে বরখাস্তের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়।মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি এলাকা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বিদ্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীল বরন হালদার বলেন,“প্রায় চার বছর আগে শ্রেণিকক্ষে ওই শিক্ষীকা একটি অনুপযুক্ত মন্তব্য করেছিলেন। তখনই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে তিনি আদালতের মাধ্যমে পুনরায় দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে এক বৈঠকে অভিভাবকদের সঙ্গে কিছু উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে অপসারণ না করলে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষীকা কাকলী রাণী মিস্ত্রী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তোপের মুখে স্কুল এলাকা ত্যাগ করায় এবিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।